আমার ফিরতে বড় দেরি হয়ে যায়,
সব পাখি ঘরে ফেরে, আমি শুধু নীড় হারাই
আমার দেখা হয়না মমতায় বিছানো শিউলি ফুল-
আমি বুনো অর্কিডের আগুন বর্ণে মাতাল হই
হারিয়ে ফেলি শিমুলের ডাল আর কাঁঠাল চাপার সুবাস।
সবাই ঘরে ফেরে, আমি শুধু বিস্মৃত হই
আমার ভাঙনের সুরে আমি অ্যাটলান্টিক সমুদ্র তুলে আনতে গিয়ে-
হারিয়ে ফেলি শ্যাওলা দিঘির ঘাট।
আমার ফেরা হয় না-
আমি হারিয়ে যাই গ্রীক পুরানে, দেবতা আইসিসে
শুধু হারিয়ে ফেলি আমার উর্বর মাটির সোঁদা গন্ধ।
আবার যদি ফিরে আসি, যদি ফেরা হয় চেনা বটের ছায়ায়
তবে মানুষ করে দিও,
দেয়াল নয়, ভেঙ্গে পড়া বাতাস নয় …
এ মাটির একটা ঘাসফুল করে রেখে দিও পায়ের তলায়।
কবিতা
শুধু আলো ছুঁয়ে ফিরে আসি অন্ধকারে
জলের নিচে নীলের খেলা-
বেঁচে আছি শুধু প্রতিচ্ছবি হয়ে
যেমনটা সূর্যের আলোয় গাছের ছায়া।
আমি গাছ হতে চেয়েছিলাম
এখন মরে যেতে ইচ্ছে করে
পৃথিবী জল শূন্য
বেঁচে থাকার তৃষ্ণাটা আর নেই।
শুধু আলো ছুঁয়ে ফিরে আসি অন্ধকারে।
নিছক প্রেম
আমি একপা বাড়ালেই হারিয়ে যাই জনসমুদ্রে
হাত ধরে রাখার কেউ নেই-
আমি চোখ বুজলেই শুনি বিরহের গান
রাত ভোর ঘুম নেই, স্বপ্ন দেখার কিছু নেই।
পথ চলে গেছে একাই
যেতে যেতে ফিরে দেখি
পাশে হাঁটার কেউ নেই
ভালো নেই, মন ভালো নেই
পথটা আর চেনা নেই।
গল্প
ভেজিটেরিয়ান
সার্গেই প্রচন্ড বিরক্তি নিয়ে তার সেক্রেটারির দিকে তাঁকালেন। মেয়েটা চুপসে গেছে। কিন্তু খারাপ খবরটা সকাল সকাল দিতেই হবে। নিরাপত্তা পরিষদের সভায় উপস্থিত না থাকতে পারলে সার্গেইকে জবাবদিহি করতে হবে। আর তাকে না জানালে লিডিয়াকে। লিডিয়া শুধু সংবাদ বাহক মাত্র।
বৃষ্টি বিলাস
যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিলাম, মাঝে মাঝে খুব ইচ্ছে করত সারারাত হাঁটব শহরের ওমাথা থেকে এমাথা পর্যন্ত। রাত যত গভীর হবে শহরের রূপ তত খোলে। কোন ব্যস্ততায় জানিনা সেটা আর হয়ে ওঠেনি। যখন হলে থাকতাম, আমি আর জহির মাঝে মাঝেই বের হয়ে যেতাম টিএসসির উদ্দেশ্যে। বিশেষ কোন কাজে নয় এমনিতেই। নানারকম জীবন দর্শনের কথা হোত জহিরের সাথে আমার। ক্লাসমেট বন্ধুদের মধ্যে মনে হয় জহিরই একটু আধটু আমাকে বোঝার চেষ্টা করত।
ভ্রমন
পৃথিবীর অনেক দেশেই এখন আর বর্ডার নেই। সবাই বর্ডার থেকে তাদের সৈন্য আর চেকপোস্ট প্রত্যাহার করে নিয়েছে। মানুষের জন্মের সময়ই সবাইকে একটা চিপ দিয়ে দেয়া হয় শরীরের ভেতর, তাতেই তার পরিচয় থাকে। সে যেখানে খুশি ভ্রমন করতে পারে, যে কোন পেশায় যোগ দিতে পারে যোগ্যতা অনুযায়ী। তাকে বাধা দেবার কেউ নেই।