আমার ফিরতে বড় দেরি হয়ে যায়,
সব পাখি ঘরে ফেরে, আমি শুধু নীড় হারাই
আমার দেখা হয়না মমতায় বিছানো শিউলি ফুল-
আমি বুনো অর্কিডের আগুন বর্ণে মাতাল হই
হারিয়ে ফেলি শিমুলের ডাল আর কাঁঠাল চাপার সুবাস।
সবাই ঘরে ফেরে, আমি শুধু বিস্মৃত হই
আমার ভাঙনের সুরে আমি অ্যাটলান্টিক সমুদ্র তুলে আনতে গিয়ে-
হারিয়ে ফেলি শ্যাওলা দিঘির ঘাট।
আমার ফেরা হয় না-
আমি হারিয়ে যাই গ্রীক পুরাণে, দেবী আইসিসে
শুধু হারিয়ে ফেলি আমার উর্বর মাটির সোঁদা গন্ধ।
আবার যদি ফিরে আসি, যদি ফেরা হয় চেনা বটের ছায়ায়
তবে মানুষ করে দিও,
দেয়াল নয়, ভেঙ্গে পড়া বাতাস নয় …
এ মাটির একটা ঘাসফুল করে রেখে দিও পায়ের তলায়।
কবিতা
বাউন্ডুলে জীবন দর্শন
রাস্তায় গিয়ে আরো কিছুক্ষণ হিমু সেজে হাঁটাহাঁটি করতে পারি
যদিও মাঝরাতের পুলিশেরা বড্ড বেরসিক, পৃথিবীর নিঃসঙ্গতা বোঝে না,
ধরলেই সক্রেটিসের মত প্রশ্ন করবে, কে তুমি? কোথায় যাও?
ধ্যাত্তেরি! আমি কি অতশত জানি?
আমি কে, কোথায় যাবো - এই উত্তর খুঁজতেই তো রাস্তায় নেমেছি।
একটা গোপন কথা
খুব কাছের একটা মানুষ খুঁজছি
তার কাছে একটা চোখ বিক্রি করব, আমার খুব একটা লাগছে না ইদানিং
পড়ে থাকলে অবহেলায় নষ্ট হবে
তার থেকে স্বজনের ভালো হোক, দৃষ্টি ফিরুক
প্রিয়জনের সন্ধানে আছি তাই।
তোমাকে চিনি না
তোমাকে দেখলেই আমার ব্যস্ততার কথা মনে পড়বে
আমি টেবিলে বসে কাগজে খুব দাগাদাগি করে যাবো
নতুন কেনা বারো টাকার বলপয়েন্ট কিছুতেই মসৃন হচ্ছে না
সাদা কাগজে অহেতুক কালি লেপ্টে যাবে, কিন্তু চোখে চোখ রাখবো না।
গল্প
ভেজিটেরিয়ান
সার্গেই প্রচন্ড বিরক্তি নিয়ে তার সেক্রেটারির দিকে তাঁকালেন। মেয়েটা চুপসে গেছে। কিন্তু খারাপ খবরটা সকাল সকাল দিতেই হবে। নিরাপত্তা পরিষদের সভায় উপস্থিত না থাকতে পারলে সার্গেইকে জবাবদিহি করতে হবে। আর তাকে না জানালে লিডিয়াকে। লিডিয়া শুধু সংবাদ বাহক মাত্র।
বৃষ্টি বিলাস
যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিলাম, মাঝে মাঝে খুব ইচ্ছে করত সারারাত হাঁটব শহরের ওমাথা থেকে এমাথা পর্যন্ত। রাত যত গভীর হবে শহরের রূপ তত খোলে। কোন ব্যস্ততায় জানিনা সেটা আর হয়ে ওঠেনি। যখন হলে থাকতাম, আমি আর জহির মাঝে মাঝেই বের হয়ে যেতাম টিএসসির উদ্দেশ্যে। বিশেষ কোন কাজে নয় এমনিতেই। নানারকম জীবন দর্শনের কথা হোত জহিরের সাথে আমার। ক্লাসমেট বন্ধুদের মধ্যে মনে হয় জহিরই একটু আধটু আমাকে বোঝার চেষ্টা করত।
ভ্রমন
পৃথিবীর অনেক দেশেই এখন আর বর্ডার নেই। সবাই বর্ডার থেকে তাদের সৈন্য আর চেকপোস্ট প্রত্যাহার করে নিয়েছে। মানুষের জন্মের সময়ই সবাইকে একটা চিপ দিয়ে দেয়া হয় শরীরের ভেতর, তাতেই তার পরিচয় থাকে। সে যেখানে খুশি ভ্রমন করতে পারে, যে কোন পেশায় যোগ দিতে পারে যোগ্যতা অনুযায়ী। তাকে বাধা দেবার কেউ নেই।