যে জীবন ছেড়ে চলে গেছি

Feb 6, 2025কবিতা0 comments

এখন আর একা থাকতে সমস্যা হয় না
অভ্যাস হয়ে গেছে।
আশেপাশে কি একটা গন্ডগোল গেল রাত-দিন জুড়ে
এখন সব শান্ত, ঝড়ের পরে বন্দরের মতো।

ঠিক সময়ে খাবার খাওয়া হয় না
তরকারিতে নুন-ঝালের কোন ছন্দ নেই
এঁটো বাসন-কোসন পড়ে থাক
রান্নাটা বিষম একটা ঝামেলার কাজ।

দু’বেলা খেতে হবে এমন নিয়ম মনে করিয়ে দেবার কেউ নেই
কেউ চা সাধে না, হুট করে ছোলা ভাজার গন্ধ আসে না।
খুব খিদে পেলে কি-বোর্ড থেকে মুখ তুলে একঢোক জল খাই
জলের মত শান্তি কি আর কিছুতে আছে?

শুকনো মরিচ আর জিরার গুড়ো ভাজার ঝাঁঝে কারো চোখে জল আসে কি?
তার আসতো! এখন বয়ামটাই ফেলে দিয়েছি
রান্নাটা ভীষন রকম বিপদজনক কাজ
রান্না করলেই খিদে লাগে, তাই গ্যাস বার্নার ফাঁকা।

এখন অভ্যাস হয়ে গেছে, জল গরম হলে
একটা টি-ব্যাগ, সবুজ রঙের চেয়ার, একটা বিকেল এমনিতেই পার।
দুটো – বিস্কিট হলে ভালো হতো, শুধু চেয়ার ছেড়ে উঠে যেতে রাজ্যের আলসেমি।
ঘুম না আসলেও রাত পার হয়ে যায়, শুধু মাথার পাশের বালিশটা শূন্য লাগে।

এখন আর ঘড়ি দেখি না, সময় মেপে বেঁচে থাকাটা অর্থহীন
সকাল হয় দুপুরে গিয়ে, আর সন্ধ্যে শুরু রাত বারোটায়
ঠান্ডা পানিতে গোসলেও আপত্তি নেই
তোয়ালে রাখার জায়গার অভাব নেই, ছোট্ট ঘরটা এখন বিশাল মাঠ।

এই যে একা থাকার মধ্যেও একটা ছন্দ আছে-
সেটা কি আগে বুঝেছিলাম?
এই যে সারাদিন মন খারাপ থাকলেও ঘড়ির কাঁটা ছুটে যায়
কেউ কি বলেছিলো?

খুব কান পেতে শুনলে নিঃস্তব্ধতারও একটা ভাষা শুনতে পাবে
আমার ব্যস্ত জীবন থেকে তাই সে কদিন ছুটি নিলো
আমাদের বোঝাপোড়ায় ভুল হচ্ছিল
নিজেদের চোখের ভাষা আমরা আর পড়তে পারছিলাম না।



0 Comments

মন্তব্য

দেলোয়ার জাহান

মনের একান্তে কিছু কথা থাকে যা কাউকে বলা যায় না। বলতে ইচ্ছা করে না। কিন্তু প্রতিনিয়ত কুরে কুরে খায় আমাকে। সে সকল হাবিজাবি জীবন দর্শন আর কিছু অসময়ের কাব্য নিয়ে আমার লেখালেখির ভুবন।

Pin It on Pinterest

Share This