যখন থেকে ঘোরাঘুরিটাকে মনোরঞ্জনের প্রধান রাস্তা হিসেবে নিয়েছি, তখন থেকে ভারতেই আমার সব থেকে বেশি যাওয়া হয়েছে। কখনো পরিবার নিয়ে কখনো পরিবার বাদে।
হবেই বা না কেন? পাশের দেশ হওয়ায় এবং ভিসা প্রক্রিয়া সহজ হবার কারনে এখন বাঙ্গালীর ভ্রমনের প্রধান তালিকায় কলকাতা, দার্জিলিং, শিমলা – মানালি ইত্যাদি যুক্ত হয়েছে। কম খরচে দেশের বাইরে ঘুরতে যাওয়াটা আমাদের জন্য ভারতই।
এবার আমি পরিবার নিয়ে ঘুরতে গিয়েছিলাম দার্জিলিং। সময়টা জুলাই হওয়াতে প্রচুর বৃষ্টিপাত হচ্ছিল। ঢাকা থেকে যেদিন রওনা দেই সেদিনই সকাল থেকে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি।
প্রতিবার বেনাপোল দিয়ে বাসে করে যাই। দীর্ঘ একটা সময় বাসে থাকা তারপর দুই দেশের ইমগ্রেশন কমপ্লিট করা, তার উপর আবার উটকো নানা ঝামেলা ইত্যাদি কারনে ঠিক করেছিলাম কলকাতা টু ঢাকা যাওয়া আসা আমরা এয়ারেই করব।
যেহেতু স্ত্রী আর বাচ্চা নিয়ে যাচ্ছি তাই এই সিদ্ধান্তটা আসলেই অনেক ভালো হয়েছিল। আমার সাথে আমার বন্ধু সজলও তার দু-বছরের বাচ্চা আর স্ত্রী নিয়ে সঙ্গী হয়েছিল। আমরা চার জন আর দুই বাচ্চা মোট ছয় জনের একটা গ্রুপ।
ঢাকা টু কলকাতা –
ঢাকা কলকাতা অনেকগুলো ফ্লাইট প্রতিদিন যাওয়া আসা করলেও যদি পনের দিন বা একমাস আগে টিকিট না করেন তবে বেশি দামে কাটতে হবে।
আমি সবগুলো এয়ারলাইনার দেখে তারপর ইউএসবাংলার টিকিট কেটেছিলাম। প্লেন টিকিটের প্রাইস নিয়ে আসলে কোন কথা বলে লাভ নাই। যারা রেগুলার এয়ার ট্রাভেল করেন তারা জানেন হোটেল এবং প্লেন ফেয়ার এই দুটো সবসময় আপ-ডাউন এর উপর থাকে। পুরো ব্যপারটা নির্ভর করে সেই সময় মানুষজনের চাপ কেমন তার উপর।
ওয়ান ওয়ে টিকেট করলে আপনার ভাড়া বেশি পড়েবে। টু-ওয়ে মানে রিটার্ন টিকিট করলে ভাড়া কম পড়বে।
আর টুরিস্ট ভিসার ক্ষেত্রে অনেক এয়ারলাইনারেরই পলিসি থাকে আপনি রিটার্ন টিকিট করবেন নিজ দেশ থেকে যাবার সময়। ফালতু সিস্টেম সব বাঙালীর জন্যই।
ফ্লাইট সকাল দশটায় হওয়ায় আমরা এয়ারপোর্টে সকাল ৭.৩০ মধ্যেই উপস্থিত ছিলাম।
ইউএসবাংলা এয়ারলাইনার অত আহামরী কোন সার্ভিস দেয় না। সিটগুলো মোটামুটি। যে নাস্তা দেয় তা আমি খাইনি কারন পছন্দ হয়নি। অবশ্য মাত্র আধা ঘন্টার ফ্লাইটে আপনি কি আর আশা করতে পারেন!
কলকাতা এয়ারপোর্টে (CCU) আপনি যখন নামবেন তখন আপনি বুঝতে পারবেন আমাদের নিজেদের এয়ারপোর্ট কত ছোট আর অগোছালো। দিল্লী বা অন্যবড় শহরের এয়ারপোর্টের সাথে তুলনা করা বাদই দিলাম।
লাগেজ বেল্ট থেকে কালেক্ট করা এবং ইমগ্রেশন শেষ করতে খুব একটা সময় লাগেনি। একই অবস্থা যদি আমাদের এয়ারপোর্টেও হোত!
এয়ারপোর্টের ভেতর থেকেই প্রিপেইড ট্যাক্সির স্লিপ কেটে বাইরে এসে আমরা একটা হলুদ ক্যাবে উঠে গেলাম। এদের এই প্রিপেইড ট্যাক্সির সিস্টেমটা আমার বেশ ভালো লাগে। দামাদামির ঝামেলা নাই ঠকার সম্ভাবনা নাই।
চাইলে আপনি উবারও কল করতে পারেন। কিন্তু সেজন্য ইন্ডিয়ান সিম লাগবে আগে আপনার।
রওনা দিলাম পুরান কলকাতার নিউমার্কেট এরিয়ার দিকে।
কলকাতায় কিন্তু থাকার মত অনেক ভালো ভালো জায়গা আছে। নিউমার্কেটের দিকে আমরা যাচ্ছিলাম কারন ওখানকার একটা হোটেলে (আফ্রিদি ইন্টাঃ) অনেকবার উঠেছি।
কলকাতা নিউমার্কেটের আশেপাশেই বাঙ্গালীরা বেশি থাকে কারন এখান থেকে শপিং এবং লেনদেন করা সোজা।
কলকাতা টু শিলিগুড়ি-
আমাদের টার্গেট ছিল কলকাতা থেকে আজকে রাতেই ট্রেনে শিলি্গুড়ি চলে যাব। তাই একটা মাত্র রুম নিয়েছিলাম বিশ্রাম নেবার জন্য। তারপর আমি আর সজল বের হলাম ফেয়ারলি প্লেস এর উদ্দেশ্যে।
১০০ রুপি দিয়ে একটা ট্যাক্সি নিয়ে চলে এলাম ফেয়ারলি প্লেস। আগে আসলে আগে পাবেন ভিত্তিতে একটা ফর্ম নিয়ে আমরা শিলিগুড়ি যাবার জন্য ট্রেনের টিকিটের আবেদন ফর্ম জমা দিলাম।
এক ফর্মেই আপনি ছয় জনের টিকিট কাটতে পারবেন। বাচ্চাদের টা আলাদা করে লেখার দরকার হয়না। তবে সবার পাসপোর্ট এবং ভিসা কপি অবশ্যই সাথে জমা দিতে হবে। অরিজিনালটাও সাথে রাখবেন দেখতে চাইবে।
কলকাতার ফেয়ারলি প্লেস থেকে আমরা চাইছিলাম শিলিগুড়ি থেকে ২ দিন পরের রিটার্ন টিকিট কাটতে। কিন্তু পারিনি কারন এই রিটার্ন টিকিট এর সিংহ ভাগই হচ্ছে নিউ জলপাই গুড়ি স্টেশন অফিসের হাতে।
সে যাই হোক, আমরা দার্জিলিং মেইলের টিকেট বগলদাবা করে ফেরত আসলাম নিউমার্কেট এলাকায়। রাত ১০টার টিকেট পাওয়া গেছে ৩-টায়ার এর নন এসি।
আমাদের যাবার কথা দার্জিলিং, কলকাতায় একদিন বেশি থাকলে খাবার খরচ এবং হোটেল ভাড়া দুটোই লস।
নিউমার্কেট ফিরেই সবাইকে নিয়ে আমরা দুপুরের খাবারের জন্য রওনা হলাম কস্তুরীর উদ্দেশ্যে। এদের এখানে ভাত-ভর্তা অসাধারন। খরচ তুলনামূলক ভাবে অন্য জায়গার থেকে বেশি কিন্তু স্বাদে অতুলনীয়।
কলকাতাতে আমরা এইদিন খুব বেশি ঘোরাঘুরি করিনি। কারন দার্জিলিং থেকে ফেরার পর কলকাতাতে ২ দিন থাকার কথা আমাদের। শপিং এবং ঘোরাঘুরি তখনই করব। তবে নিউমার্কেট এরিয়ায় পানিপুরি আর মালাই খেয়ে দেখতে কোন দোষ নেই। এদের জুস গুলোও বেশ ভালো মানের এবং দামে কম।
রাত দশটায় আমরা শিয়ালদহ থেকে নিউ জলপাইগুড়ির দিকে দার্জিলিং মেইলে রওনা দেই।
কলকাতার এয়ারপোর্ট যতটা সুন্দর লেগেছিল শিয়ালদহ স্টেশন কিন্তু সেরকম নয়। মানুষজনের ভিড়, নোংরা, মেঝেতে সবার শুয়ে থাকা এইগুলা এইখানে সাধারন বিষয়।
আর হাঁ, কলকাতায় দালাল আর পকেটমার থেকে সাবধান থাকবেন। আমরা কিন্তু কোন দালালের সাহায্য নেইনি। টিকিট, হোটেল, খাবার, কেনাকাটা সব নিজেরাই। দরকার হলে লোকাল কাউকে জিজ্ঞেস করুন বা গুগল করুন। যে ট্যাক্সিতে ভ্রমন করছেন তাকে জিজ্ঞেস করুন।
নিউ জলপাইগুড়ি টু দার্জিলিং-
সারারাত ট্রেন জার্নি করে সকাল বেলা নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে আসলাম। কারোই তেমন খাওয়া দাওয়া হয়নি। সাথে রাখা বিস্কুট, চিপস আর পানি এই দিয়ে কাজ চলেছে।
যদিও চাইলে আপনি ট্রেনে খাবার কিনতে পারবেন। ট্রেন ছাড়ার কিছুক্ষন পর একজন হকার বিরিয়ানি টাইপের কিছু খাবার নিয়ে এসেছিল। এরপর তাকে আর দেখতে পাইনি।
তবে প্রতি স্টেশনেই চা আর কফি বিক্রি করা হকার পাবেন।
জলপাইগুড়ি স্টেশনটা শিয়ালদহ থেকে অনেক ভালো লেগেছে আমার। পরিষ্কার, সাজানো গোছানো। সবুজের মাঝখানে নিঃশ্বাস নেবার অনেকটা জায়গা আছে।
জলপাইগুড়ি নেমেই আমরা প্রথম টিকিট অফিসে গিয়েছি ফেরার টিকিট কনফার্ম করতে। মেইন স্টেশন বিল্ডিং থেকে বের হলেই হাতের বামপাশে দুটো বিল্ডিং পরেই ফরেন কোটায় টিকিট কাটার জায়গা। এইখানেও আপনাকে একটা ফর্ম পূরন করতে হবে এবং আপনার পাসপোর্ট এবং ভিসার কপি জমা দিতে হবে।
কাজেই পাসপোর্ট এবং ভিসার এক্সট্রা কপি সবসময় সাথে রাখবেন। না হলে জায়গায় জায়গায় গিয়ে ফটোকপির দোকান খুঁজতে হবে।
যদিও আমাদের ভাগ্য খারাপ থাকার কারনে আসার সময়ের টিকিট একই কামরায় পাইনি আমরা। দুজনকে ফিরতে হয়েছে এসিতে, যার ভাড়া বেশি। ১৩২৫ রুপি করে, আর নন এসির ভাড়া সেই একই ৫০০ রুপি করে।
ও একটা কথা বলতে ভুলেই গেছি, আপনি যদি টয় ট্রেনে করে দার্জিলিং এ যেতে চান, তবে সেটাও এখান থেকেই কিনতে হবে। তবে আমারা সে চেষ্টা করিনি। কারন এই টিকিট দিনে গিয়ে দিনে পাওয়টা কষ্টকর। সেক্ষেত্রে আপনাকে আগে অনলাইনে বুকিং দিয়ে যেতে হবে বা শিলিগুড়িতে একদিন অপেক্ষা করতে হতে পারে।
নিউজলপাইগুড়ি স্টেশনের বাইরেই ট্যাক্সি স্ট্যান্ড। এখান থেকে খুব সহজেই দার্জিলিং যাবার গাড়ি পেয়ে যাবেন। চাইলে পুরো জীপ ভাড়া না করে শেয়ারেও যেতে পারেন, তাতে খরচাও কিছুটা কম পড়ে। আর বাস সার্ভিসতো আছেই।
আমরা একটা টাটা-সুমো জীপ ভাড়া করি ২৫০০ রুপি দিয়ে। সাধারনত ভাড়া ২০০০ হয় কিন্তু কিছু রাস্তা বন্ধ থাকার কারনে আমাদের একটু ঘুরে যেতে হবে। এই কারনেই স্ট্যান্ডের ড্রাইভাররা বেশি চাইছিল।
জলপাইগুড়ি থেকে জীপে করে দার্জিলিং যাবার রাস্তাটায় একটা অন্যরকম মাদকতা আছে। বৃষ্টি ভেজা আঁকাবাকা রাস্তা, বিশাল লম্বা লম্বা গাছ, চায়ের বাগান আর একটু পরপর রঙ্গিন বাড়িঘর। আর এর সাথে যদি জুড়ে দেয়া হয় ব্রায়ান এডামস কিংবা ডেভিড গিলমোর এর সুর তবে সোনায় সোহাগা। হুট করে সময়টা কেটে যাবে।
মুভিতে অনেক দেখেছি, কিন্তু বাস্তবিকই এত সুন্দর রাস্তা আমি অনেক কম দেখেছি। সারারাত জার্নি করেও মুখে যখন পাহাড়ি ভেজা বাতাসের ছোঁয়া লেগেছিল তখন মুহুর্তেই চাঙ্গা হয়ে গেছি।
দার্জিলিং পৌছে আমরা মল রোডে হোটেল চানক্যতে উঠি। মোটামুটি মানের কমদামী হোটেল।
ভাড়া ১৫০০ রুপি করে। এই হোটেলের নিচেই রেষ্টুরেন্ট আছে সেখানে বেশ ভালো ভাত-তরকারী পাওয়া যায়।
সকালের নাস্তায় আমরা পরটা-ডিম আর সবজি দিয়ে খেয়েছিলাম। স্বাদ বেশ ভালো, তবে আপনাকে মনে রাখতে হবে আপনি বাংলাদেশে নেই, আর দেশের খাবারের সাথে তুলনা করবেন না।
মল রোডে একটা কেএফসিও আছে। সেখানেও ঢু মারতে পারেন হতাশ হবেন না। তবে সব থেকে ভালো লাগবে মলরোডে সন্ধার পর চিকেন, পাকোড়া, মম এইরকম হাবিজাবি জিনিস গরম গরম ভেজে বিক্রি করা হয় রাস্তার পাশে।
একবার টেষ্ট করে দেখবেন গেলে। স্বাদ এখনো মুখে লেগে আছে।
দার্জিলিং এ কি দেখবেন সেটা নির্ভর করে আপনি কয়দিন থাকবেন তার উপর। আমরা দুদিন ছিলাম। কিন্তু বৃষ্টির কারনে কেবল কার এবং আরো কয়েকটা জায়গায় যেতে পারিনি।
মল রোডেই ট্যাক্সি স্টান্ডের সাথে ট্রাভেল এজেন্টদের পাবেন। আপনার হোটেলের রিসেপশনে জিজ্ঞেস করলেও হবে। সবার দাম-দর মোটামুটি একই। তবে পাহাড়ি রাস্তা, বন, চা-বাগান বাদেও আরো অনেক কিছু আছে দেখার এখানে।
এখানকার সদা হাস্যজ্জোল পরিশ্রমী মানুষজন আপনার মন কাড়বেই। এদের ছন্দবদ্ধ চলাফেরার মাঝে কেমন যেন একটা মাদকতা আছে।
পুরো দার্জিলিং জুড়ে নানা জায়গা আছে ঘোরার, পিস প্যাগোডা, বাতাসিয়া লুপ, পৃথিবীর সবথেকে উঁচু রেলওয়ে স্টেশন, তেঞ্জিং রক। তবে সব থেকে ভালো লাগবে কেবল কার আর দার্জিলিং চিড়িয়াখানা।
জানোয়ারের থেকে বেশি ভালো লাগবে চিড়িয়াখানার পরিবেশ। বৃষ্টিস্নাত গাছপালা আর শান্ত নির্মল পরিবেশ, সেই সাথে কুয়শার চাদরে ঘেরা চারপাশ। কেমন যে একটা হলিউডি পরিবেশের সৃষ্টি করেছিল। মনে হচ্ছিল পোল্যান্ডের কোন দূর্গম পাহাড়ে আছি।
আপনার যদি বৃষ্টি ভালো না লাগে তবে জুন-জুলাই মাসে না যাওয়াই ভালো। তবে বৃষ্টি ভেজা পাহাড়ী প্রকৃতি দেখতে হলে এই সিজনেই যেতে হবে।
কোথাও ঘুরতে যাবার মানে এই না যে সেখানকার কিছু পপুলার জায়গায় গিয়ে সেলফি তুলে চলে আসা। সময় থাকলে একটু নজর বাড়িয়ে সাধারনের সাথে মিশে যাবার চেষ্টা করুন। লোকাল খাবার ট্রাই করুন, কম পপুলার জায়গা গুলোতে ঘুরে দেখুন।
দার্জিলিং যতবার যাবো এর প্রেমে পড়ে যাবো। এখানকার আকঁবাকা পাহাড়ী রাস্তা আর বৃষ্টি ভেজা হিমেল বাতাস আজন্ম আমাকে টানবে। কোথাও একটা সুর আছে এখানে, একটু কান পেতে শুনতে হবে।
কলকাতায় ফেরা…
ফিরতে হবে কলকাতায়, তাই আবার শিলিগুড়ির দিকে যাত্রা করলাম দুদিন পরে। আসার পথে মিরিক হয়ে আসলাম। কিন্তু বৃষ্টির জন্য এখানেও লেকের কিছুই দেখতে পারলাম না।
মিরিক তাই আমার কাছে অদেখা একটা স্পটই রইয়ে গেল।
জলপাইগুড়ি স্টেশনে আসার পথে পথে দু জায়গায় থেমে ছিলাম আমরা। একবার চা নাস্তা করতে একটা চায়ের বাগানে। আরেকবার একটা হোটেলে বিকেল বেলায় খাবার জন্য। স্পট দুটোর নাম মনে নাই। কি দরকার, স্মৃতিটাই আসল।
নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে আগে আগে পৌছে যাওয়ায় প্রায় ঘন্টা তিনেক অপেক্ষা করতে হয়েছে আমাদের। একটা প্লাস্টিকের কাভার কিনে সেটা বিছিয়ে আমরা বসে ছিলাম সবাই।
আমরা ফিরেছিলাম পদাতিক এক্সপ্রেসে। রাত ন’টায় ট্রেনে উঠি আর সকাল বেলা শিয়ালদহ স্টেশনে নামি।
ফের নিউমার্কেট এর দিকে যাত্রা এবং এবার একটা কমদামী হোটেল (বিমান লজ) গুগল থেকে খুঁজে বের করে সেখানে ফোন দিয়ে কনফার্ম করেছিলাম আগেই। আমাদের বাজেট কিছু কম পড়ে গিয়েছিল তাই আমরা সেভিংস মুডে চলে গিয়েছিলাম।
কলকাতা এক আজব শহর। এখানে বোর হবার মত সময় কম। প্রতিবার কলকাতায় আসি আর শপিং করে চলে যাই। খুব একটা ঘোরাঘুরি করা হয় না। তাই এবার বউ-বাচ্চা নিয়ে দেখতে গেলাম সাইন্স সিটি আর মাদার ওয়াক্স মিউজিয়াম। আরো কিছু জায়গা যাবার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু খুব বেশি সময় ছিলনা আমাদের হাতে।
তার উপর আবার শপিং করতে গিয়ে অনেকটা সময় নষ্ট হয়েছিল।
মাদার ওয়াক্স মিউজিয়াম একটা মজার জায়গা –
সাইন্স সিটি, কলকাতা আসলে এখানে একবার হলেও যাবেন। তবে সারাদিন সময় হাতে নিয়ে যাবেন। অনেকগুলো শো আর এক্টিভিটি আছে। দেখার আছে অনেক কিছু।
কলকাতার নিউমার্কেট আমাদের সবার কাছেই মোটামুটি ভাবে পরিচিত। এটা নিয়ে নতুন কিছু বলার নেই। তবে খুব কম বাঙ্গালীই আছেন যারা কলকাতার আশেপাশে ঘুরে দেখেন। সস্তা মদ আর সিরিয়ালের শাড়ী বাদেও কলকাতার দেবার আছে অনেক কিছু।
কলকাতা ইতিহাসের শহর, আনন্দের শহর। একটু ম্যাপটা খুলে দেখুন। অনেক ছবি অনেক স্মৃতি। তার কিছুটা নিচের ভিডিওতে পাবেন।
0 Comments